Header Ads Widget

▶️ কালেমার শর্তাবলী।




মুসলিম ভায়েরা! মুখে 'ঈমান এনেছি' বললেই কেউ মু'মিন হয়ে যায় না। মু'মিন হওয়ার শর্ত পালন করতে হয়। মহান আল্লাহ বলেন,

‎‫ অর্থাৎ, মরুবাসী (বেদুঈন)গণ বলে, 'আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি।' তুমি বল, 'তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করনি, বরং তোমরা বল, আমরা আত্মসমর্পণ করেছি; কারণ বিশ্বাস এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশই করেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর, তবে তোমাদের কর্মফল সামান্য পরিমাণও লাঘব করা হবে না। আর নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।' (সূরা হুজুরাত ১৪ আয়াত)‬‎

একজন স্ত্রী যেমন শাদী কবুলে কেবল 'হু' বললেই কারো স্ত্রী থাকে না, যতক্ষণ না সে স্বামীর  সংসারে এসে দাম্পত্যের সকল শর্ত মেনে না নিয়েছে, তেমনি একজন মু'মিন ততক্ষণ মু'মিন হতে পারে না, যতক্ষণ না ঈমানের কথা অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার ও কাজে পরিণত করেছে।

কলেমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' মুখে বললেই কেউ মুসলিম হয়ে যায় না। তার শর্তাবলী পালন না করলে ঐ কালেমা বলার কোন মূল্য থাকে না।

হাসান বাসরী (রঃ)কে বলা হল, কিছু লোকে মনে করে, "যে ব্যক্তি 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলবে সে বেহেশতে প্রবেশ করবে"---এ কথা কি ঠিক? তিনি বললেন, 'যে ব্যক্তি তা বলবে এবং তার হক ও ফরয আদায় করবে, সেই বেহেশতে প্রবেশ করবে।'

অহাব বিন মুনাব্বিহকে বলা হল, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ তো জান্নাতের চাবি। সুতরাং তা পড়ে নিলেই তো যথেষ্ট।' তিনি বললেন, 'তা জান্নাতের চাবি অবশ্যই। কিন্তু চাবিতে একাধিক দাঁত থাকে। তাছাড়া তালা খোলা যায় না।'

বলা বাহুল্য, আমল ছাড়া কেবল কলেমা পড়ে বেহেশতে যাওয়া যাবে না। এ জন্যই কুরআন মাজীদে লক্ষ্য করবেন যে, যেখানেই ঈমানের কথা বলা হয়েছে, প্রায় সেখানেই পাশাপাশি নেক আমলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু আমল ছাড়া ঈমান পরিপূর্ণ নয় এবং কেবল ঈমানের দাবি ক'রে জান্নাত যাওয়া সহজ নয়।

কলেমার ৭টি শর্তাবলী চাবির দাঁত স্বরূপ। সেই শর্তাবলী নিম্নরূপঃ-

(১) নেতিবাচক ও ইতিবাচক উভয় দিক নিরূপণ ক'রে তার অর্থ জানতে হবে। কলেমার সঠিক অর্থ সম্বন্ধে অজ্ঞতার অন্ধকারে বাস করলে হবে না।

মহান আল্লাহ বলেন, ‫فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ)

অর্থাৎ, সুতরাং তুমি জেনে রাখ, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন উপাস্য নেই। (সূরা মুহাম্মাদ ১৯ আয়াত) এই কলেমার সাক্ষ্য দিতে হয়। আর কোন কিছুর সাক্ষ্য তা না জেনে দেওয়া যায় না। সুতরাং মুসলিম মুখে যে কলেমার সাক্ষ্য দেবে, তার মানে জানা একান্ত জরুরী। মহান আল্লাহ বলেন,

‎‫وَلَا يَمْلِكُ الَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِهِ الشَّفَاعَةَ إِلَّا مَن شَهِدَ بِالْحَقِّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ }‬‎

অর্থাৎ, আল্লাহর পরিবর্তে ওরা যাদেরকে ডাকে, সুপারিশের অধিকার তাদের নেই। তবে যারা সত্য জেনে ওর (সত্যের) সাক্ষ্য দেয়, তাদের কথা স্বতন্ত্র। (সূরা যুখরুফ ৮৬)

জ্ঞানীরাই কেবল সজ্ঞানে সাক্ষ্য দিতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন,

‎‫شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُوا الْعِلْمِ قَائِماً بِالْقِسْطِ لَا إِلَهَ إِلَّا الَزِكَةُ (۱)‬‎

অর্থাৎ, আল্লাহ সাক্ষ্য দেন এবং ফিরিশাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণও সাক্ষ্য দেয় যে, তিনি ব্যতীত অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই। তিনি ন্যায় প্রতিষ্ঠাকারী। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই; তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। (আলে ইমরান ১৮)

মহানবী বলেন, "যে ব্যক্তি মারা যায়, আর সে জানে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (মুসলিম) (২) তার অর্থে পরিপূর্ণ একীন ও প্রত্যয় হতে হবে।

কলেমার অর্থ জানার সাথে সাথে হৃদয়-মনে তা স্থান পেতে হবে। যে অর্থ মুসলিম বুঝবে, সেই অর্থ অন্তরে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে হবে। সেই অর্থে কোন প্রকার সন্দেহ হলে চলবে না।

মহান আল্লাহ বলেন,

অর্থাৎ, বিশ্বাসী তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং নিজেদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ। (সূরা হুজুরাত ১৫ আয়াত)

মহানবী বলেন, "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্যিকার মা'বুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল' যে ব্যক্তি সন্দেহহীন হয়ে এই দুই কলেমা নিয়ে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, সে ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করবে।” (মুসলিম)

তিনি আবু হুরাইরাকে বলেছিলেন, "আবু হুরাইরা! আমার এ জুতো জোড়া সঙ্গে নিয়ে যাও এবং এ বাগানের বাইরে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে পাঠকারী যে কোন ব্যক্তির সাথে তোমার সাক্ষাৎ হবে, তাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।” (ঐ)

(৩) বিশুদ্ধচিত্তে (ইখলাসের সাথে) তা পাঠ করতে হবে।

কলেমা পড়তে হবে বিশুদ্ধচিত্তে ইখলাসের সাথে। অর্থাৎ, তাতে শির্কের দুর্গন্ধ থাকলে কলেমা পড়ার কোন লাভ নেই। কলেমার সাথে শির্কের বড় শত্রুতা আছে। আলো-অন্ধকারের মত সম্পর্ক আছে। কলেমা পাঠকারী মুশরিক হতে পারে না। আর কোন মুশরিক মুসলিম থাকতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেন,

অর্থাৎ, তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে। আর এটাই সঠিক ধর্ম। (সূরা বাইয়িনাহ ৫ আয়াত) মহানবী বলেন, "আমার সুপারিশের অধিক সৌভাগ্য লাভকারী হবে সেই ব্যক্তি, যে আন্তরিকভাবে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলবে।” (বুখারী)

তিনি আরো বলেন, "যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্যে (কলেমা) 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেন।” (বুখারী-মুসলিম) এই শর্ত পালনের জন্য মুসলিমের প্রত্যেক আমল খাঁটি ও সঠিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। ফুযাইল বিন ইয়ায বলেন, 'আমল যদি বিশুদ্ধ আল্লাহর জন্য হয়, কিন্তু সঠিক না হয়, তাহলে তা কবুল হবে না এবং তা যদি সঠিক হয়, কিন্তু বিশুদ্ধ না হয়, তাহলেও কবুল হবে না। বিশুদ্ধ হবে (সকলের সন্তুষ্টি দৃষ্টিচ্যুত ক'রে) কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমল করলে। আর সঠিক হবে (সকল তরীকা বাদ দিয়ে) কেবল মহানবী-এর তরীকা অনুযায়ী আমল করলে।' (আল-কাওলুস সাদীদ ৪০পৃঃ) (৪) তার অর্থ-বিশ্বাসে সত্যনিষ্ঠা ও অকপটতা থাকতে হবে।

মুখে যে কলেমা পড়া হচ্ছে সেই কলেমার অর্থে এবং সেই অনুযায়ী আমলে কপটতা থাকলে হবে না। মুখে এক অন্তরে অন্য এক হলে চলবে না। মুনাফিক্বীর ধোঁকাবাজি থাকলে হবে না। এমনকি কোন বিপদ-আপদে পতিত হলেও কলেমায় সত্যনিষ্ঠা প্রমাণ করতে হবে এবং কোন পরীক্ষার সম্মুখীন হলে তাতে পাশ করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, 

অর্থাৎ, মানুষ কি মনে করে যে, 'আমরা বিশ্বাস করি' এ কথা বললেই ওদেরকে পরীক্ষা না ক'রে ছেড়ে দেওয়া হবে? আমি অবশ্যই এদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; সুতরাং আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন, কারা সত্যবাদী ও কারা মিথ্যাবাদী। (সূরা আনকাবুত ২-৩ আয়াত)

অর্থাৎ, মানুষের মধ্যে এমন লোক রয়েছে যারা বলে, 'আমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী', কিন্তু তারা বিশ্বাসী নয়। আল্লাহ এবং বিশ্বাসিগণকে তারা প্রতারিত করতে চায়, অথচ তারা যে নিজেদের ভিন্ন কাউকেও প্রতারিত করে না। এটা তারা অনুভব করতে পারে না। তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন ও তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাচারী। (সূরা বাক্বারাহ ৮-১০ আয়াত)

মহানবী বলেন, "যে কেউ হৃদয়ের সত্যবাদিতার সাথে সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামকে হারাম ক'রে দেবেন।” (বুখারী-মুসলিম)

অবশ্যই যে ভালবাসার দাবি করবে, তাকে কাজে তার প্রমাণ দেখাতে হবে। কাজে প্রমাণ বিপরীত পাওয়া গেলে জানতে হবে সে কপট প্রেমিক।

ইবনে রজব (রঃ) বলেন, 'যে ব্যক্তি মুখে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, অতঃপর আল্লাহর অবাধ্যাচরণ ও বিরোধিতায় শয়তান ও প্রবৃত্তির আনুগত্য করে, সে ব্যক্তির কর্ম তার কথার মিথ্যায়ন করে। আর আল্লাহর অবাধ্যতায় শয়তান ও প্রবৃত্তির আনুগত্যের পমিাণ অনুযায়ী তার তওহীদ হ্রাস পেতে থাকে।' (আল-ক্বাওলুস সাদীদ ৪০পৃঃ)

আর মহান আল্লাহ বলেন, 

অর্থাৎ, অতঃপর ওরা যদি তোমার আহবানে সাড়া না দেয়, তাহলে জানবে ওরা তো কেবল নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে। আল্লাহর পথনির্দেশ অমান্য ক'রে যে ব্যক্তি নিজ খেয়াল- খুশীর অনুসরণ করে, তার অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত আর কে? নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়কে পথনির্দেশ করেন না। (সূরা ক্ব্বাসা আয়াত ৫০) 

অর্থাৎ, খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না, করলে এ তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ পরিত্যাগ করে, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচার দিনকে ভুলে থাকে। (সূরা স্বা-দ ২৬ আয়াত)

(৫) এই কালেমা ও তার নির্দেশের প্রতি ভক্তি ও ভালবাসা থাকতে হবে এবং তা নিয়ে আনন্দিত হতে হবে। আল্লাহর প্রতি তা'যীম ও দ্বীনের প্রতীকের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। মহান আল্লাহকে ভালবাসার সকল শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমনঃ-

(ক) তিনি যা ভালবাসেন ও পছন্দ করেন, তা ভালবাসতে ও পছন্দ করতে হবে।

(খ) তিনি যা ঘৃণা ও অপছন্দ করেন, তা ঘৃণা ও অপছন্দ করতে হবে।

(গ) তাঁর বন্ধুদেরকে ভালবাসতে হবে এবং শত্রুদেরকে ঘৃণা ও বর্জন করতে হবে।

(ঘ) তিনি যা আদেশ ও নিষেধ করেন, তা পালন করতে হবে।

(ঙ) তাঁর দ্বীনের সাহায্য করতে হবে এবং তার বিজয়ে আনন্দিত ও পরাজয়ে দুঃখিত হতে হবে।

এ ছাড়া যে ভালবাসার দাবী করে, সে আসলে ঝুটা ও কপট। যে আল্লাহর শত্রুদেরকে ভালবাসে, তাঁর বন্ধু তথা দ্বীনদার মুসলিমদেরকে ঘৃণা করে, সে কলেমা পড়লেও সে ঝুটা।

মহান আল্লাহ বলেন,

অর্থাৎ, কোন কোন লোক আছে, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যকে (আল্লাহর) সমকক্ষ বলে মনে করে এবং তাদেরকে আল্লাহকে ভালোবাসার মত ভালবাসে, কিন্তু যারা বিশ্বাস করেছে, তারা আল্লাহর ভালবাসায় দৃঢ়তর। (সূরা বাক্বারাহ ১৬৫ আয়াত)‬‎

অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ ধর্ম হতে ফিরে গেলে আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনয়ন করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন ও যারা তাঁকে ভালবাসবে, তারা হবে বিশ্বাসীদের প্রতি কোমল ও অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দায় ভয় করবে না। (মাইদাহ ৫৪)

মহানবী বলেন, "যার মধ্যে তিনটি গুণ থাকে সে ঈমানের মিষ্টতা লাভ করে থাকে। আল্লাহ ও তাঁর রসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে অধিক প্রিয় হবে; কাউকে ভালোবাসলে কেবল আল্লাহ'র জন্যই ভালবাসবে। এবং কুফরী থেকে তাকে আল্লাহর বাঁচানোর পর পুনরায় তাতে ফিরে যাওয়াকে এমন অপছন্দ করবে, যেমন সে নিজেকে আগুনে নিক্ষিপ্ত করাকে অপছন্দ করে।” (বুখারী ও মুসলিম)

(৬) প্রত্যাখ্যানহীনভাবে সাদরে গ্রহণ করতে হবে। এই কলেমার দাবী মেনে নিতে হবে। তা সাদরে গ্রহণ করতে হবে। উন্নাসিকতা বা অহংকারের সাথে তা বর্জন করলে হবে না। যেমন মেহমানরূপে কোন ব্যক্তিকে আপনার বাড়ির দরজায় পেয়ে পরিচয় হওয়ার পর তাকে ভিতরে বরণ করতে হয়। বরণ না করলে মেহমানের অপমান হয়। যারা কলেমাকে বরণ করে না, তাদের সম্বন্ধে মহান আল্লাহ বলেছেন,

৪৪৪৪৪৪৪৪

‎‫قَالُوا إِنَّا بِمَا أُرْسِلْتُم بِهِ كَافِرُونَ) (٢٤) অর্থাৎ, (প্রত্যেক সতর্ককারী) বলত, 'তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষগণকে যার অনুসারী পেয়েছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথনির্দেশ আনয়ন করি, তবুও কি তোমরা তাদের পদাংক অনুসরণ করবে?' (প্রত্যুত্তরে) তারা বলত, 'তোমরা যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছ, আমরা তা‬‎ প্রত্যাখ্যান করি।' (সূরা ইউরাফ আয়াত ২৪) 

অর্থাৎ, ওদের নিকট 'আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই' বলা হলে ওরা অহঙ্কারে অগ্রাহ্য করত এবং বলত, 'আমরা কি এক পাগল কবির কথায় আমাদের উপাস্যদেরকে বর্জন করব?' (সূরা সাফফাত ৩৫-৩৬ আয়াত)

(৭) তার নির্দেশ, দাবী ও অধিকারের অনুবর্তী হতে হবে। মহান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তিনি বলেন,‬‎

অর্থাৎ, তার অপেক্ষা ধর্মে কে উত্তম, যে বিশুদ্ধ (তওহীদ বাদী) হয়ে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে? (সূরা নিসা ১২৫ আয়াত)

অর্থাৎ, যে কেউ সৎকর্মপরায়ণ হয়ে আল্লাহর নিকট আত্মত্মসমর্পণ করে, সে আসলে এক মজবুত হাতল ধারণ করে। আর যাবতীয় কার্যের পরিণাম আল্লাহর অধীনে। (সূরা লুকুমান) 

অর্থাৎ, কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা বিশ্বাসী (মু'মিন) হতে পারবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচারভার তোমার উপর অর্পণ না করে, অতঃপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে নেয়। নিসা ৬৫) ৮। তাগূত অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া সকলের ইবাদত ও আনুগত্যকে অস্বীকার করতে হবে। 

মহান আল্লাহ বলেন,

‎‫   অর্থাৎ, যে তাগূতকে (অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য বাতিল উপাস্যসমূহকে) অস্বীকার করবে ও আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করবে, নিশ্চয় সে এমন এক শক্ত হাতল ধরবে, যা কখনো ভাঙ্গার নয়। আর‬‎ আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী। (সূরা বাক্বারাহ ২৫৬) উক্ত শর্তাবলী পালনে উৎসাহী মুসলিমই আসল ও খাঁটি মুসলিম। সেই মুসলিমের কলেমা পাঠ করার সার্থকতা আছে। মহান আল্লাহ সকল মুসলিমকে কলেমার শর্তাবলী পালন সহ তা পাঠ করার তওফীক দিন। আমীন।

Post a Comment

0 Comments

শিয়া সুন্নিদের হাদিস কতগুলো

A touching story of an oppressed woman
Chat with us on WhatsApp