Header Ads Widget

▶️ ইউসুফ (আঃ) এর ধৈর্য ও ক্ষমার গল্প🌹

   



ইউসুফ (আঃ) এর ধৈর্য ও ক্ষমার গল্প

হজরত ইউসুফ (আঃ) এর জীবন আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস, ধৈর্য ও ক্ষমার এক অনন্য উদাহরণ। তার জীবনের ঘটনা পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত হয়েছে, যা আমাদের সকলের জন্য শিক্ষণীয়।


**শৈশবের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ষড়যন্ত্র**

হজরত ইউসুফ (আঃ) ছিলেন হজরত ইয়াকুব (আঃ)-এর এক পুত্র। তার অন্য ভাইয়েরা তার প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিল, কারণ তার পিতা তাকে খুব ভালোবাসতেন। একদিন তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, ইউসুফ (আঃ)-কে তারা হত্যা করবে বা কোথাও দূরে ফেলে আসবে যাতে তাদের পিতা তার প্রতি মনোযোগ দেয়। শেষ পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, তাকে একটি কূপে ফেলে দেবে এবং কারো দয়া হলে সে বেঁচে যাবে।

তারা ইউসুফ (আঃ)-কে নিয়ে গিয়ে কূপে ফেলে দিল এবং বাড়ি ফিরে এসে তাদের পিতাকে মিথ্যা বলল যে, একটি নেকড়ে তাকে খেয়ে ফেলেছে। তাদের পিতা হজরত ইয়াকুব (আঃ) খুব কষ্ট পেলেন, কিন্তু তিনি আল্লাহর উপর ভরসা রেখে ধৈর্য ধারণ করলেন।

**উদ্বাস্তু জীবন এবং আল্লাহর দয়া**

ইউসুফ (আঃ)-কে কূপ থেকে উদ্ধার করে মিসরের এক দাস ব্যবসায়ী বিক্রি করে দিল। তিনি মিসরের রাজপ্রাসাদে দাস হিসেবে কাজ করতে শুরু করলেন। সেখানকার একজন প্রধান ব্যক্তি, যিনি রাজপ্রাসাদের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন, ইউসুফ (আঃ)-কে কিনে নেন। তার স্ত্রী জুলাইখা তাকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ইউসুফ (আঃ) আল্লাহর প্রতি ভয় এবং সততার কারণে সেই প্রলোভন থেকে নিজেকে রক্ষা করেন। এতে করে জুলাইখা ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠান।


**কারাগারে ধৈর্য এবং সাফল্যের শীর্ষে**

কারাগারে থাকার সময়ও ইউসুফ (আঃ) ধৈর্য ধারণ করলেন এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখলেন। সেখানে তিনি কয়েকজন কারাবন্দীর স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিলেন। এই ঘটনা মিসরের বাদশাহর কানেও পৌঁছাল। একদিন বাদশাহ একটি অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন এবং তার ব্যাখ্যা চাইলেন। ইউসুফ (আঃ) সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে বলেন যে, মিসরে কয়েক বছর চরম খরা আসতে চলেছে, তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তার ব্যাখ্যা ও জ্ঞানে মুগ্ধ হয়ে বাদশাহ তাকে মিসরের অর্থনীতির দায়িত্ব দেন এবং তাকে উচ্চপদস্থ করলেন।

**ভাইদের সাথে পুনর্মিলন এবং ক্ষমার দৃষ্টান্ত**

খরা শুরু হলে ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইয়েরা খাদ্যের সন্ধানে মিসরে আসে। তারা ইউসুফ (আঃ)-কে চিনতে পারেনি, কিন্তু ইউসুফ (আঃ) তাদের চিনতে পারেন। অনেক ঘটনার পর, যখন তারা জানতে পারে যে ইউসুফ (আঃ) তাদের সেই হারানো ভাই, তখন তারা খুব লজ্জিত হয় এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে।

ইউসুফ (আঃ) তাদের ক্ষমা করে দেন এবং বলেন, "আজ তোমাদের জন্য কোনো ধমক নেই। আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। তিনিই সবচেয়ে দয়ালু।"


**গল্পের শিক্ষা**

এই গল্প থেকে আমরা শিখি যে, ধৈর্য, বিশ্বাস এবং ক্ষমা আল্লাহর কাছ থেকে সর্বোচ্চ পুরস্কার এনে দিতে পারে। ইউসুফ (আঃ)-এর জীবনে যতই কঠিন সময় আসুক না কেন, তিনি কখনো আল্লাহর উপর থেকে বিশ্বাস হারাননি। সেই ধৈর্য ও বিশ্বাসের ফলস্বরূপ তিনি জীবনের চরম সাফল্য অর্জন করেন এবং সেই সাথে আল্লাহর কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন।

এই গল্প আমাদের শেখায় যে, বিপদের সময় ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং যারা আমাদের সাথে অন্যায় করে, তাদের ক্ষমা করাও আমাদের কর্তব্য।



Post a Comment

0 Comments

শিয়া সুন্নিদের হাদিস কতগুলো

A touching story of an oppressed woman
Chat with us on WhatsApp