Header Ads Widget

▶️ আম্বর মাছের সেই অবাক করা ঘটনা

 

আম্বর মাছ

হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনশত জন সাহাবার একটি মুজাহিদ গ্রুপকে কুরাইশের বানিজ্যিক কাফেলাদেরকে ধরার জন্য সমুদ্রের উপকূলের দিকে পাঠিয়ে ছিলেন। দীর্ঘ দিন পর্যন্ত মুজাহিদগণ সে কাফেলার অপেক্ষা করলেন তাদের খানা পিনার সব রসদপত্র শেষ হয়ে গেল। অতপর তারা অপারগ হয়ে গাছের পাতা খেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাই এ যুদ্ধকে 'সারিয়ায়ে খান্ত' (অর্থাৎ- ঐ সৈনিক দল, যারা গাছের পাতা খেয়েছিলেন) বলা হয়।

এ ঘটনাটি স্বয়ং একজন মুজাহিদ হযরত জাবের (রাঃ) বর্ণনা করেন- তিনি বলেন- হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশের কাফেলাদের উপর অতর্কিত হামলা করে তাদেরকে ধরে নিয়ে আসার জন্য আমাদেরকে পাঠালেন। হযরত আবু ওবায়দা বিন জাব্রাহ (রাঃ) কে আমাদের আমীর নিযুক্ত করলেন। আর একটি বেগে করে আমাদেরকে সফরের কিছু রসদপত্র দিলেন। আর তা খেজুর ব্যতিত অন্য কিছু ছিলনা। আমাদের আমীর আবু ওবায়দা (রাঃ) আমাদেরকে প্রতিদিন মাত্র একটি একটি খেজুর দিতেন। আমাদের প্রত্যেকেই নিজের বন্টনে পড়া খেজুরটিকে ছোট বাচ্চার জন্য ন্যায় চোষন করত। এরপর পানি পান করে নিত। এবং নিজের খেজুরটি কাপড়ে পেঁচিয়ে রেখে দিত। ধীরে ধীরে এ পন্থা ও একদিন শেষ হয়ে গেল। অতপর আমরা অপারগ হয়ে গাছের পাতা খেতে শুরু করেছিলাম। গাছের পাতা ছিড়ে তা পানিতে ভিজিয়ে খেয়ে নিতাম। এর ফলে আমাদের ঠোটগুলো ফেটে গিয়েছিল। আর আমাদের পায়খানা হত ভেড়া ও বকরীর লেদার ন্যায়।

একবার আমরা সমুদ্রের কিনারার দিকে গিয়েছিলাম। তখন হঠাৎ একটি বস্তু আমাদের দৃষ্টি আকর্ষন করল। যা দেখতে বড় ধরণের একটি বালুর স্তূপ মনে হচ্ছিল। আমরা যখন তার নিকটে গেলাম, তখন দেখতে পেলাম যে, সমুদ্র তার কিনারায় একটি বড় ধরণের মাছ ফেলে রেখেছে। যাকে মানুষ 'আম্বর' বলে আখ্যা দিয়ে থাকে।

হযরত আবু ওবায়দা (রাঃ) প্রথমে বলেছিলেন যে, এটাতো মৃত প্রাণী। অতপর কিছুক্ষণ পর বললেন- না- ব্যপারটি এমন নয়। বরং আমরা আল্লাহর রাসূলের প্রেরিত লোক। এবং আল্লাহর পথে জিহাদে লিপ্ত। এবং আমরা অপারগ অবস্থায় আছি। তাই আমাদের জন্য এটা

খাওয়া সম্পূর্ণ বৈধ। তাই তোমরা সবাই এ থেকে খাও। আমরা তিনশত জন মুজাহিদ ১৫ দিন পর্যন্ত এর গোশত খেয়েছিলাম। এতে আমরা খুব স্বাস্থ্যবান হয়ে গেলাম।

আমার খুব ভালভাবে স্বরণ আছে যে, আমরা সে মাছের চোখের গর্ত হতে বড় বড় মটকা ভরে তৈল বাহির করতাম। এবং আমরা তার দেহ থেকেগরুর গোশতের ন্যায় গোস্ত কেটে কেটে খেতাম।

একবার হযরত আবু ওবায়দা (রাঃ) ১৩ জন মুজাহিদকে সে মাছের চোখের গর্তের ভেতর বসিয়ে দিয়ে ছিলেন। সবাই আরামে বসতে পেরেছিল।

একবার তিনি সে মাছের মেরুদন্ডের হাড়টিকে ধনুকের ন্যায় মাটিতে দাঁড় করালেন। অতপর লম্বা একজন মুজাহিদকে উঁচু ধরণের একটি উটের উপর বসিয়ে দিয়ে সেই মেরুদন্ডের হাড়টির নীচ দিয়ে অতিক্রম হতে বললেন। সে মুজাহিদ খুব সহজেই পার হয়ে গেল। একটু মাথা ঝুকানোর ও প্রয়োজন হয়নি।

আমরা তার গোশত হতে শুখিয়ে শুখিয়ে কিছু গোস্ত আমাদের সহিত নিয়ে এসেছিলাম। আমরা মদীনা শরীফ গিয়ে যখন হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত হলাম তখন সে মাছের কথাও আলোচনা করলাম। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- ইহা আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের খাদ্য হিসাবে পাঠানো হয়েছে। তোমাদের নিকট কি অতিরিক্ত কিছু অংশ আছে? আমরা যা কিছু নিয়ে এসেছিলাম তা থেকে কিছু হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দিলাম। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা থেকে বক্ষণ করলেন। (বোখারী ও মুসলিম)

হঠাৎ ঝর্ণা

খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত আবু বকর (রাঃ) মুরতাদদের শায়েস্তা করার জন্য হযরত আ'লা ইবনে হাদ্রামী (রাঃ) কে মদীনা থেকে বাহরাইনের দিকে পাঠিয়ে ছিলেন। পথে তাদের অনেক মরু প্রান্তর পাড়ি দিতে হয়েছিল। রাতের বেলা প্রচন্ড তুফান হল। যার কারণে উটের রশি সমূহ ছিড়ে গিয়েছিল। আর উটগুলো এমন ভাবে উদাও হয়ে গেল যে, কেউ বুঝতে পারছিল না যে, উটগুলো জীবিত আছে, না কি মরে গেছে? এদিকে সৈন্যদের খানা-দানা তথা যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্র সবই ছিল সে উটগুলোর উপরে। তাই মুজাহিদগণ খুব পেরেশান ও চিন্তিত হয়েছিলেন।

সকাল বেলা হযরত আ'লা (রাঃ) সমস্ত মুজাহিদীনদের কে একত্রিত করলেন। আর এ মুহুর্তটি ছিল এমন যে, মুজাহিদগণ প্রায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার অবস্থা এবং জীবন থেকে নৈরাশ হয়ে, একে অপরকে অসিয়ত করতে শুরু করে ছিলেন। হযরত আ'লা ইবনে হাদ্রামী (রাঃ) মুজাহিদীনদেরকে উদ্দেশ্য করে বল্লেন- আপনারা কি মুসলয়ান নন? সবাই উত্তর দিলেন, হ্যাঁ আল্লাহর শুকরিয়া, আমরা সবাই মুসলমান। অতপর তিনি বল্লেন- আপনারা কি সবাই আল্লাহর সৈনিক নন? আপনারা কি জিহাদের মাধ্যমে দ্বীনের সাহায্য করার জন্য আসেননি? সবাই হ্যাঁ বলে উত্তর দিলেন। অতপর তিনি বল্লেন- আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন। আল্লাহ তায়ালা এমন লোকদের কখন ও ধ্বংস করবেন না। অতপর তিনি কেবলা রুখ হয়ে সবাইকে নিয়ে কাকুতি-মিনতির সহিত খুব দোয়া করলেন।

বাংলাদেশি যুবক ও এক রোহিঙ্গা তরুনীকে নিয়ে লেখা "আমিরুল মোমেনিন মানিক" দারুন এক উপন্যাস লিখেছে পড়ে দেখুন ভালো লাগবেই। ৪ টি ছোট ছোট পর্বে সমাপ্ত হয়েছে।

▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-১

▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-২


▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-৩

▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-৪

🌹 ধন্যবাদ 🌹

সূর্যের কিরণ মাত্র ছড়াতে ছিল, এমন সময়ই মুজাহিদগণ দেখতে পেলেন যে হঠাৎ, তাদের নিকটেই পানির একটি ঝর্ণা প্রবাহিত হতে লাগল। সবাই অতি আনন্দচিত্তে পানি পান করল। এবং অযু গোসল সেরে নিল। তারা সবাই এই আনন্দে মত্ত ছিল, এমন সময়েই হঠাৎ দেখা গেল যে, সেই মাল বোঝাই হারানো উটগুলোও ফিরে এসেছে। এভাবে তারা মুজাহিদদের সাথে যে, আল্লাহর সাহায্য থাকে, তা স্বচোক্ষে অবলোকন করলেন। একটু সামনে গিয়ে বুঝতে পারলেন যে, দুশমন নদী পাড়ি দিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তখন হযরত 'আ'লা ইবনে হাদ্রামী (রাঃ) চার হাজার মুসলিম সৈনিকদের আদেশ দিলেন- ঘোড়া নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দাও। তাঁর আদেশ পেয়ে মুজাহিদগণ বজ্রের ন্যায় পানিতে ঝাঁপ দিলেন। আল্লাহর কুদরতে তাদের ঘোড়ার কদমের একটু খুর ও পানিতে ভিজেনি এবং মুজাহিদীনগণ সহজেই নদী পার হয়ে গেলেন।

ঠিক এমনি ভাবে দিজলা ও ফুরাত নদীতেও এমন ঘটনা ঘটেছিল।

হযরত সা'দ বিন আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) ইসলামের লশকরদেরকে ঘোড়া

হযরত সা'দ বিন আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) ইসলামের লশকরদেরকে ঘোড়া নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়ার নির্দেশ দিয়ে ছিলেন। তঁরা ঝাঁপ দিয়ে সবাই পার হয়ে গেলেন। এ ভাবেই আল্লাহ তায়ালা মুজাহিদদের সাহায্য করে থাকেন।

Post a Comment

0 Comments

শিয়া সুন্নিদের হাদিস কতগুলো

A touching story of an oppressed woman
Chat with us on WhatsApp